কিন্তু মার্কিন নয়া সরকার এখন তাদের সেই ভূমিকার অবসান ঘটানোর কথা বলছে। হোয়াইট হাউসের জাতীয় প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান বলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইয়েমেনে সৌদি আগ্রাসনে সমর্থন দেয়া বন্ধ করবেন। এই অবস্থানের কথা জো বাইডেন নিজেও জানিয়েছেন। পার্সটুডে
ইয়েমেন যুদ্ধকে "কৌশলগত বিপর্যয়" হিসেবে অভিহিত করে বাইডেন গতকাল বলেছেন: "এই যুদ্ধের অবসান ঘটাতে হবে।" তিনি বলেন: "ইয়েমেনে আগ্রাসনে অস্ত্র বিক্রিসহ সকল সহযোগিতার অবসান ঘটাতে হবে।" তবে তিনি এটাও বলেছেন, সৌদি আরবকে তার "আঞ্চলিক অখণ্ডতা" রক্ষায় সহায়তা করবে আমেরিকা।
তিনি বলেন সৌদি আরব ইরান-সমর্থিত বাহিনীর হামলার হুমকির মুখে রয়েছে। বাইডেনের এই সিদ্ধান্ত ডোনাল্ড ট্রাম্পের পদক্ষেপের বিপরীত নেওয়া হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। ট্রাম্প তার শাসনামলের শেষ দিনগুলিতে আনসারুল্লাহ বাহিনীকে " সন্ত্রাসী" সংগঠন হিসাবে ঘোষণা দিয়ে দেশটির ওপর অবরোধ আরোপ করে। ট্রাম্প ভেবেছিলো এ কাজ করে তিনি ইয়েমেনিদের প্রতিরোধ ভেঙে দিয়ে সৌদি জোটের পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ একটা কিছু করে ফেলেছেন। আসলে তার উদ্দেশ্য ছিল সন্ত্রাসী তকমা লাগিয়ে লক্ষ লক্ষ ইয়েমেনিকে খাদ্য ও মানবিক সহায়তা দেওয়ার পথ বন্ধ করা। সৌদি জোট আগ্রাসন চালিয়ে এ পর্যন্ত হাজার হাজার ইয়েমেনিকে হত্যা করেছে এবং এই দরিদ্র এই আরব দেশটির অবকাঠামো ধ্বংস করে দিয়েছে।
জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা ইয়েমেনকে বিশ্বের বৃহত্তম মানবিক সংকটের ক্ষেত্র হিসেবে উল্লেখ করেছে। অথচ নরওয়েজিয়ান শরণার্থী কাউন্সিলের সেক্রেটারি জেনারেল ইয়ন ইংল্যান্ড বলেছেন: "আনসারুল্লাহকে 'সন্ত্রাসী' তালিকায় রাখা একটি যুক্তিহীন ও ধ্বংসাত্মক পদক্ষেপ"।
বাইডেন প্রশাসন এরিমধ্যে এক মাসের জন্য আনসারুল্লাহ'র ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে। সেইসঙ্গে সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের কাছে অস্ত্র বিক্রয়ও স্থগিত করেছে। সৌদি ও আমিরাত সরকার ভেবেছিল ২০২০ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে জয়ী হয়ে ট্রাম্প আরও চার বছর হোয়াইট হাউসে অবস্থান করবেন এবং তাদের আঞ্চলিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সহায়তা করবেন।
অবশ্য পশ্চিম এশীয় অঞ্চলের মার্কিন মিত্র দেশগুলোকে সামরিক ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতা অব্যাহত রাখা আমেরিকার অস্ত্র নির্মাতাদের স্বার্থই নিশ্চিত করবে। সুতরাং এমনও হতে পারে যে সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের কাছে অস্ত্র বিক্রির ওপর স্থগিতাদেশ শিগগিরই প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে এবং তাদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের উদ্বেগজনক বিষয়টিও হয়েতো ভুলে যাবে। কেননা বাইডেন তার সাম্প্রতিক এক মন্তব্যে বলেছেন সৌদি-আরবের প্রতি তার সরকারের পক্ষ থেকে সমর্থন অব্যাহত রাখা হবে। তার মানে রিয়াদ এবং ওয়াশিংটনের মধ্যকার ঘনিষ্ট সম্পর্ক অটুট থাকবে। iqna