ইয়েমেনের হুথি নিয়ন্ত্রিত ন্যাশনাল স্যালভেশন সরকারের সেনাবাহিনী ও স্বেচ্ছাসেবী বাহিনী ‘আল-বিজায়া’ প্রদেশে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ‘নাসর আল-মোবিন’ নামে অভিযান সফলভাবে সম্পন্ন করেছে। কয়েকটি কারণে ‘নাসর আল-মোবিন’ অভিযান গুরুত্বপূর্ণ।
প্রথমত ইয়েমেনি যোদ্ধাদের এই অভিযান সৌদি সমর্থিত উগ্র জঙ্গি সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে পরিচালিত হয়েছে। যদিও সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ও তাদের সমর্থকরা ইয়েমেনের হুথি আনসারুল্লাহকে সন্ত্রাসী সংগঠন বলে মনে করে কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে অত্যন্ত জনপ্রিয় আনসারুল্লাহ সংগঠন রাজধানী সানায় শক্তিশালী সরকার গঠন করেছে এবং তারা জঙ্গি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। ইয়েমেনি যোদ্ধাদের হামলায় সৌদি আরব, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল সমর্থিত আল কায়দা ও আইএস জঙ্গিরা এখন বিরাট বিপর্যয়ের সম্মুখীন এবং তারা ব্যাপক প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতির স্বীকার হয়েছে।
‘নাসর আল-মোবিন’ অভিযানের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ দিকটি হচ্ছে, ‘আল-বিজায়া’ প্রদেশটি ইয়েমেনের কেন্দ্রে অবস্থিত এবং ভৌগোলিক দিক থেকে এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এখানে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইয়েমেনিদের বিজয়ের অর্থ হচ্ছে তারা সফলভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। তৃতীয় গুরুত্বপূর্ণ দিকটি হচ্ছে, ‘আল-বিজায়া’ প্রদেশে ইয়েমেনিদের বিজয় ও অগ্রযাত্রা খুব অল্প সময়ের মধ্যে হয়েছে। ইয়েমেনের সশস্ত্র বাহিনীর মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারিয়ি বলেছেন, ‘নাসর আল-মোবিন’ অভিযান চালিয়ে সফল হতে মাত্র ৭২ ঘণ্টা সময় লেগেছে। এ থেকে ইয়েমেনের সেনাবাহিনী ও স্বেচ্ছাসেবী বাহিনীর দ্রুত সামরিক অভিযান পরিচালনার সক্ষমতার প্রমাণ পাওয়া যায়।
ইয়েমেনিদের সাম্প্রতিক এ সফল অভিযানের আরো গুরুত্বপূর্ণ দিকটি হচ্ছে, ‘আল-বিজায়া’ প্রদেশ বিজয়ে সেনাবাহিনী ও গণবাহিনীর মধ্যে সমন্বয় ও সহযোগিতার বিষয়টি ফুটে উঠেছে। সেনা মুখপাত্র ইয়াহিয়া সরিয়ি বলেছেন, আল-বিজায়া প্রদেশ বিজয়ের ক্ষেত্রে সেখানকার স্থানীয় জনগণ ও উপজাতিরা সহযোগিতা করেছে এবং এ জন্য তিনি তাদেরকে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। তাদের সহযোগিতার কারণেই ওই অঞ্চলের দুটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকা থেকে সৌদি সমর্থিত জঙ্গি সন্ত্রাসীদেরকে উৎখাত করা সক্ষম হয়েছে।
সাম্প্রতিক যুদ্ধে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটের সহযোগিতার বিষয়টি আরো স্পষ্ট হয়েছে। তাদের মধ্যকার এই সহযোগিতার বিষয়ে হুথি সমর্থিত ন্যাশনাল স্যালভেশন সরকার বহু ছবি ও ভিডিও প্রকাশ করেছে। যুদ্ধে যেসব আইএস জঙ্গি সন্ত্রাসীরা ধরা পড়েছে তারাই সৌদি সেনাদের সঙ্গে তাদের সহযোগিতার কথা স্বীকার করেছে। আরেকটি বিষয় হচ্ছে ইয়েমেনিদের সাম্প্রতিক বিজয় সৌদি আরবের জন্যও বিরাট পরাজয় এবং তাদের জন্য চপেটাঘাত। কেননা তারা ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়ে এবং সন্ত্রাসীদের লেলিয়ে দিয়েও ইয়েমেনের হুথি সমর্থিত সরকারকে দুর্বল করতে পারেনি। iqna