IQNA

বিশ্বের নিপীড়িত নির্যাতিত মুস্তায'আফ জাতি সমূহের মুক্তির শুভ বার্তা বাহী ইমাম খোমেইনীর নেতৃত্বে ১৯৭৯ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি ইরানে সফল ইসলামী বিপ্লব

20:47 - February 10, 2024
সংবাদ: 3475085
ইকনা: মালিতে প্রচুর স্বর্ণ খনি থাকলেও ফরাসীরা শত শত টন সোনা শুধুমাত্র মালি থেকেই নিয়ে গেছে। মালি ও অন্যান্য আফ্রিকীয় দেশ থেকে এভাবে সোনা লুণ্ঠন করে নিয়ে ফ্রান্স ২৩০০ টনের অধিক সোনার রিজার্ভ  গড়েছে । অথচ বহু স্বর্ণের খনি অধ্যুষিত মালির স্বর্ণের রাষ্ট্রীয় রিজার্ভ মাত্র ০ টন । স্বর্ণ খনি অধ্যুষিত অন্যান্য আফ্রিকীয় দেশেরও স্বর্ণের রিজার্ভ ০ টন!!
ফরাসী ঔপনিবেশিক শাসন ও শোষণ এক সময়ের বিশ্বের সবচেয়ে ধনী দেশ মালিকে বিশ্বের সবচেয়ে দরিদ্র দশ দেশের অন্তর্ভুক্ত করেছে। (দেখুন: https://en.m.wikipedia.org/wiki/Economy_of_Mali
  Mali is among the ten poorest nations of the world, is one of the 37 Heavily Indebted Poor Countries, and is a major recipient of foreign aid from many sources ... )
মালিতে প্রচুর স্বর্ণ খনি থাকলেও ফরাসীরা শত শত টন সোনা শুধুমাত্র মালি থেকেই নিয়ে গেছে। মালি ও অন্যান্য আফ্রিকীয় দেশ থেকে এভাবে সোনা লুণ্ঠন করে নিয়ে ফ্রান্স ২৩০০ টনের অধিক সোনার রিজার্ভ  গড়েছে । অথচ বহু স্বর্ণের খনি অধ্যুষিত মালির স্বর্ণের রাষ্ট্রীয় রিজার্ভ মাত্র ০ টন । স্বর্ণ খনি অধ্যুষিত অন্যান্য আফ্রিকীয় দেশেরও স্বর্ণের রিজার্ভ ০ টন!!
এই হল ফ্রান্সের উপনিবেশবাদী স্বভাব ও চরিত্র যার মূল বৈশিষ্ট্য হচ্ছে দুর্বল দেশগুলোকে দখল করে তাদের সকল সহায়  সম্পদ লুণ্ঠন। আর লুণ্ঠন ও দস্যুতার এ চরিত্রটা শুধু ফ্রান্সের একার নয় বরং সকল ইউরোপীয় সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলোরও এই একই স্বভাব ও চরিত্র । ইউরোপীয় জাতিগুলো যেখানেই গেছে সেখানকার সব কিছু লুটপাট এবং সেখানে রক্ত গঙ্গা প্রবাহিত করেছে । ইউরোপীয়দের আসল স্বরূপ হচ্ছে তথাকথিত সভ্য - ভদ্র বেশভূষার আড়ালে বিশাল তীক্ষ্ণ ধারাল দাঁতের অধিকারী রক্ত পিপাসু নেকড়ে এবং রক্ত চোষা বাদুর বা ড্রাকুলা চরিত্র ( Vampire or Dracula character ) । নাইজারেও ফরাসী উপনিবেশবাদীরা এই একই জঘন্য কাজ করেছে। নাইজার থেকে গত বছর ( ২০২৩ ) পর্যন্ত ফ্রান্স এক রকম মাগনায় ( নামকে ওয়াস্তে মূল্যে) হাজার হাজার টন ইউরেনিয়াম নিয়ে গেছে। নাইজারের ইউরেনিয়াম জাতীয় ফরাসী বিদ্যুত চাহিদার তিন ভাগের একভাগ মেটাত । এ ভাবে দশকের পর দশক ধরে ফরাসীরা অন্যান্য খনিজ সম্পদ সহ ইউরেনিয়াম নিয়ে গিয়ে নাইজারকে চরম দারিদ্র্যের মধ্যে রাখলে দেশটির সামরিক জান্তা গত বছর (২০২৩ )  তথাকথিত গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচিত ফ্রান্সের পদাশ্রিত রাষ্ট্রপতিকে পদচ্যুত করে নাইজার থেকে ফ্রান্সের ইউরেনিয়াম লুণ্ঠন প্রক্রিয়া বন্ধ করে দিয়েছে। এতে নিজেদের স্বার্থ ক্ষুন্ন হলে ম্যাখখাঁ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন নাইজারের সামরিক জান্তার হাতে গণতন্ত্র নিষ্পেষিত হচ্ছে বলে পশ্চিমা সরকার ও সংবাদ মাধ্যম সমূহ মায়া কান্না জুড়ে দিয়েছিল !
এই হল পাশ্চাত্য ও তাদের তথাকথিত গণতন্ত্র ( এটাকে গণযন্ত্রণাতন্ত্র বলাই শ্রেয়‌) । আসলে যারা দেশে দেশে  এ ধরণের তল্পিবাহক তাবেদার গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করে অথবা সামরিক অভ্যুত্থান ঘটিয়ে দেশে দেশে পশ্চিমা স্বার্থ বিরোধী গণতান্ত্রিক সরকার সমূহের পতন ঘটায় , বিভিন্ন দেশে ( ভিয়েতনাম , আফগানিস্তান , ইরাক , সিরিয়া লেবাননে ) আগ্রাসন চালিয়ে গণহত্যা যজ্ঞের অবতারণা এবং মিলিয়ন মিলিয়ন মানুষ হত্যা করেছে ও করছে, নিজেদের দেশে ( মাযুরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা , অস্ট্রেলিয়া ) আদিবাসীদের মেরেকেটে সাবার করে দিয়েছে এবং পশ্চিমা দেশগুলোর নির্বাচন হচ্ছে সবচেয়ে ব্যয়বহুল এবং পুঁজিপতিদের টাকার হোলিখেলা ( অর্থাৎ পুঁজিপতিরা টাকার ভিক্ষা দিয়ে রাজনৈতিক নেতাদের নির্বাচিত করে সংসদে পাঠায় , প্রধানমন্ত্রী বা প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করে এবং সাংসদ , প্রধানমন্ত্রী বা প্রেসিডেন্ট হচ্ছে পুঁজিপতিদের আজ্ঞাবহ ভৃত্য সদৃশ্য যারা জন স্বার্থের চাইতে পুঁজিপতিদের গোষ্ঠীগত স্বার্থই দেখে সবচেয়ে বেশি । ) অতএব পশ্চিমা দেশগুলো কি আসলেই গণতান্ত্রিক ? শুধু মাত্র গণতন্ত্রের ফাঁকা বুলি আওরালে কি গণতন্ত্র কায়েম হয়ে যাবে ? এ সব সাম্রাজ্যবাদী পশ্চিমা দেশগুলোকে ভালো করে চেনার সময় এসে গেছে। পশ্চিমারা যে মানবতার দুশমন তা মালী ও নাইজারেরর মতো ইউরোপীয় সাম্রাজ্যবাদ কবলিত দেশগুলোর আর্থ - সামাজিক - সাংস্কৃতিক - নিরাপত্তা মূলক অবস্থা থেকে স্পষ্ট প্রতিভাত হয় । তাই পশ্চিমাদের নাগপাশ থেকে মুক্ত হতে না পারলে প্রকৃত মুক্তি নেই। আর ১৯৭৯ সালের ১১ফেব্রুয়ারি ইমাম খোমেইনীর নেতৃত্বে ইরানে মহান ইসলামী বিপ্লব বিজয় ও ইসলামী প্রজাতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা এবং ইরানের নেতৃত্বে বিশ্ব লুটেরা মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ ও তার বশংবদ প্রতিভু ইসরাইলের বিরুদ্ধে সুদীর্ঘ ৪৫ বছরের অক্লান্ত প্রতিরোধ সংগ্রাম আজ ফিলিস্তীন, লেবানন , সিরিয়া, ইরাক , বাহরাইন,ইয়ামান , আফগানিস্তানসহ মুসলিম বিশ্ব ও সমগ্র বিশ্বের প্রাণকেন্দ্র পশ্চিম এশিয়ায় ( মধ্যপ্রাচ্য) ছড়িয়ে পড়েছে এবং পশ্চিমা পরাশক্তি বিশেষ করে মাযুরা ( মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র) ও যুরা (যুক্তরাজ্য)কে জীর্ণশীর্ণ ও পর্যদুস্ত করে দিচ্ছে। এই প্রতিরোধ সংগ্রাম থেকে অনুপ্রাণিত ফিলিস্তীনী মুক্তি যোদ্ধা ও মুজাহিদরা ৪ মাসাধিককাল যাবৎ সফল প্রতিরোধ ও মুক্তি যুদ্ধ ও জিহা অব্যাহত রেখে পশ্চিমাদের বিশেষ করে মাযুরা ( মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ) ও যুরার ( যুক্তরাজ্য) পূর্ণ সমর্থন ও সাহায্য প্রাপ্ত  দখলদার হানাদার সন্ত্রাসবাদী রাষ্ট্র ইসরাইলকে গাযায় ধরাশায়ী , শ্রান্ত , ক্লান্ত , জীর্ণশীর্ণ করে দিচ্ছে যা এই অপরাধী , আগ্রাসী , বর্ণবাদী, যালেম রাষ্ট্রটিকে পতনের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাবে । এখন ইরানের ইসলামী বিপ্লবের এই বিপ্লবী প্রতিরোধ সংগ্রামের চেতনা জাতিসমূহের মাঝে সম্প্রসারিত ও বিকশিত হয়ে আলোকিত নতুন ভবিষ্যতের শুভ বার্তা দিচ্ছে। এই মহান ইসলামী বিপ্লব বিজয় বার্ষিকী উপলক্ষে বিশ্বের মযলূম মুস্তায'আফ জাতি সমূহ মুক্তি পাক এবং অন্যায় ও শোষণের চির অবসান হোক - এটাই একান্ত কাম্য ।
মুহাম্মদ মুনীর হুসাইন খান
captcha