IQNA

ইসলামে খুমস/৩

কুরআনে উল্লেখিত খুমসের আয়াতের দিকে এক নজর

0:02 - October 27, 2023
সংবাদ: 3474568
তেহরান (ইকনা): ইসলামের কাঙ্খিত অর্থনীতি নৈতিকতা এবং স্নেহের সাথে মিশ্রিত, এবং কুরআনে উল্লেখিত খুমস আয়াতের দিকে নজর দিলে এই সমস্যার গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলি প্রকাশ পায়।

ইসলামের কাঙ্খিত অর্থনীতি নৈতিকতা এবং স্নেহের সাথে মিশ্রিত, এবং কুরআনে উল্লেখিত খুমস আয়াতের দিকে নজর দিলে এই সমস্যার গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলি প্রকাশ পায়।
«وَ اعلَموا أنّما غَنِمتُم مِن شَى‌ءٍ فَاِنّ لِلّهِ خُمُسَه و لِلرَّسولِ ولِذِى القُربى‌ وَ الیَتامى‌ والمَساكینِ وابنِ السَّبیلِ اِن كُنتُم آمَنتُم بِاللّه...؛
এবং জেনে রাখ যে, যা কিছু তোমরা গনীমত (যুদ্ধলব্ধ সম্পদ) থেকে লাভ কর তার এক-পঞ্চমাংশ কেবল আল্লাহর জন্য এবং (এই) রাসূলের জন্য এবং (রাসূলের) আত্মীয়-স্বজন, ইয়াতিম (পিতৃহীন), দরিদ্র এবং অভাবগ্রস্ত মুসাফিরের জন্য নির্ধারিত…
সূরা আনফাল, আয়াত: ৪১
 
আয়াত নাযিলের সময়
কেউ কেউ আয়াতটি নাযিলের সময়কে বনী কাইনকার যুদ্ধ (হিজরি দ্বিতীয় বছরের ১৫ শাওয়াল), কেউ কেউ উহুদের যুদ্ধ (হিজরি তৃতীয় বছরের ৭ শাওয়াল) এবং কেউ কেউ বদরের যুদ্ধের (হিজরী দ্বিতীয় বছরের রমজান) সময় নাযিল হয়েছিল বলে বিবেচনা করেন। যে আল্লাহ চান ইসলামের মুজাহিদিনরা যুদ্ধে প্রাপ্ত গনিমতের (জিনিসপত্রের) খুমস পরিশোধ করুক।
 
খুমস সম্পর্কিত আয়াতের প্রতি নির্ভুল দৃষ্টিভঙ্গি
খুমস আয়াতের দিকে নজর দিলে এর গুরুত্ব বোঝা যায় কারণ:
১. আহকাম সম্পর্কিত খুব কম আয়াতেই এই সমস্ত গুরুত্ব একের পর এক আবির্ভূত হয়েছে। «واعلموا، انّما، من شى، فانّ، للّه خُمُسه (بجاى «خمسه للّه») و ان كنتم آمنتم» শব্দগুলি গুরুত্বের চিহ্ন।
 
২. মানুষকে উত্তেজিত করার জন্য এই আয়াতে বলা হয়েছে যদি তোমরা ঈমান আনায়ন কর তথা বিশ্বাস কর, তবে খুমস দাও।
 
৩.«فانّ للّه خُمُسه»  বাক্যটি (পরিভাষয় জুমলায়ে এসমিয়া বলা হয়) নির্দেশ করে যে এই আদেশ অস্থায়ী বা মৌসুমী নয়; বরং এই আদেশ স্থায়ী একটি আদেশ। উপরন্তু, ঈমানদার বা বিশ্বাসের চিহ্ন এমন কিছু সাময়িক হতে পারে না।
 
৪. আয়াতের প্রথম "واعلمو" শব্দের অর্থ হল আপনার খুমস প্রদানের ক্ষেত্রে বিশ্বাস করা উচিত এবং বিষয়টিকে গুরুত্ব সহকারে নেওয়া উচিত। এটা সত্যিই আশ্চর্যজনক যে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করা, নবীর পাশে থাকা, নামাজ ও রোজা রাখা, উত্তম আকিদা থাকা, মুহাজির, আনসার ও পূর্ববর্তীদের মধ্যে থাকা, আহত হওয়া এবং অবশেষে কাফের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে জয়লাভ করা একাই যথেষ্ট নয়। কেননা এই সমস্ত পূর্ণতা থাকা সত্বেও, কুরআন এখনও বলে: হে বিজয়ী যোদ্ধারা! যদি তোমরা ঈমান আনায়ন কর তথা বিশ্বাস কর, তবে গনীমতের খুমস প্রদান কর। আপনি যদি জিহাদ এবং নামাযের মতো কিছু আদেশ অনুসরণ করেন, কিন্তু খুমস প্রদানের ক্ষেত্রে যে আদেশ দেওয়া হয়েছে, তা অনুসরণ না করেন; তাহলে আপনি প্রকৃত ঈমানদার ব্যক্তি নন।
 
গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট:
বদরের যুদ্ধের রাতে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঘুমাননি এবং ক্রমাগত প্রার্থনা করেছেন এবং বলেছেন: হে আল্লাহ! মুসলিমদের এই ক্ষুদ্র দলটির পৃথিবীতে কোন সমকক্ষ নেই, তারা ব্যর্থ হলে পৃথিবীতে আপনার বিশ্বস্ত বান্দা থাকবে না। 
কিন্তু কুরআন এই যোদ্ধাদের সম্বোধন করে বলে: যদি ঈমান আনায়ন কর, তাহলে খুমস দাও। অর্থাৎ বিশ্বে মুমিনের সংখ্যা খুব কম হতে পারে, কিন্তু যারা মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দোয়ার অধীনে, তারাও খোদায়ী দায়িত্ব পালন না এবং খুমস প্রদান না করলে ঈমানদার ব্যক্তিতে পরিণত হতে পারবে না।
• কুরআনের শিক্ষক আয়াতুল্লাহ মুহসেন ক্বারায়াতির লেখা " খুমস" বই থেকে সংগৃহিত

 

captcha